চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর মামলায় তার মা নীলা চৌধুরীর করা রিভিশন আবেদনের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। শুনানি শেষে সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক আগামী ২০ অক্টোবর আদেশ ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।
এদিন সালমান শাহর মায়ের পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমরা মামলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পর্যালোচনার জন্য রিভিশন আবেদন করেছিলাম। ২০২২ সাল থেকে শুনানি চলছিল, আজ তা শেষ হয়েছে। আমরা আশাবাদী—আদালত রিভিশন মঞ্জুর করবেন এবং মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেবেন।”
শুনানির দিন আদালতপাড়ায় সালমান শাহ হত্যার বিচার দাবিতে ভক্তরা মানববন্ধন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের নিজ ফ্ল্যাটে মারা যান জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ (পূর্ণ নাম চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন)। তার মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা করেন সালমান শাহর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই তিনি মামলাটিকে হত্যা মামলা হিসেবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এরপর আদালতের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর প্রতিবেদনে জানায়—সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা রিভিশন মামলা করেন।
২০০৩ সালে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে যায়, যার প্রতিবেদন ২০১৪ সালে দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। সেই প্রতিবেদনে হত্যার অভিযোগ নাকচ করা হয়।
পরে সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার মা নীলা চৌধুরী মামলাটি চালিয়ে যান। তিনি ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ‘নারাজি’ আবেদন করেন এবং ১১ জনকে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করেন।
পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব, তবে ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট আদালত র্যাবকে তদন্ত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন এবং দায়িত্ব দেয় পিবিআইকে। দীর্ঘ চার বছর তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
পিবিআই জানায়, ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, আলামত ও তথ্য বিশ্লেষণে হত্যার কোনো প্রমাণ মেলেনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সংকটের কারণে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ পিবিআইয়ের প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের অব্যাহতি দেন। এরপর সালমান শাহর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার পুনর্বিবেচনার দাবিতে রিভিশন আবেদন করা হয়, যার শুনানি সোমবার শেষ হলো। আদেশ আসছে আগামী ২০ অক্টোবর।









