রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে পৌঁছানোর পর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) গভীর রাতে মরদেহ পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় পোড়াগাছা মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাকে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত আবুল কালাম (৩৫) ঈশ্বরকাঠি গ্রামের মৃত জলিল চোকদারের ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন। পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের জলকাঠি এলাকায় বসবাস করতেন তিনি। পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক—পাঁচ বছরের আব্দুল্লাহ ও তিন বছরের সুরাইয়া আক্তার।
স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সন্তানরা এখনো বুঝতে পারেনি তাদের বাবা আর বেঁচে নেই। ওরা শুধু বলে, ‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করোনা।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাই যে, ওদের বাবা আর কখনো ফিরে আসবে না!”
চাচাতো ভাই আব্দুল গণি চোকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই আমার ভাই মারা গেছে। এর দায় কে নেবে?”
মেট্রোরেলের সহকারী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, “মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাতে ও দাফন কার্যক্রমে অংশ নিতে আমাকে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।”
নড়িয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন, “আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি এবং পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তাদের যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসন পাশে থাকবে।”
স্থানীয়দের দাবি, রাজধানীতে অবকাঠামো নির্মাণের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি না থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হতো। এখন এক পরিবারের স্বপ্ন চিরতরে নিভে গেল মেট্রোরেলের এক টুকরো লোহার নিচে।









