রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর এখনো ধোঁয়া উড়ছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরোপুরি নির্বাপণ সম্ভব হয়নি। কেমিক্যালের কারণে আগুন নিভাতে সময় লাগছে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ‘রাইজিং ফ্যাশন’ পোশাক কারখানা ও পাশের ‘কসমিক ফার্মা’ কেমিক্যাল গুদামে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ শুরু করে। দীর্ঘ চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ভবনের ছাদে ওঠার দুটি দরজা তালাবদ্ধ ছিল, তাই অনেকেই বের হতে পারেননি। “তালা খোলা থাকলে এত মৃত্যু হতো না,” ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক শ্রমিক।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, “কেমিক্যালের আগুন জটিল প্রকৃতির, দ্রুত নিভানোর চেষ্টা করলে বিস্ফোরণের ঝুঁকি থাকে।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে রূপনগর থানার ওসি (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান জানান, নিহত ১৬ জনের মধ্যে সাতজনের মরদেহ স্বজনরা শনাক্তের দাবি করেছেন। লাশ হস্তান্তরের আগে ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “নয়জন পুরুষ ও সাতজন নারী নিহত হয়েছেন। লাশগুলো এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, শনাক্ত করা কঠিন। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই শনাক্ত নিশ্চিত করা হবে।”
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল বলেছেন, “অনুমোদনহীন কেমিক্যাল গুদাম বন্ধে প্রশাসন ও স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে। নিয়ম মেনে গুদাম স্থাপন না করলে এমন দুর্ঘটনা ঠেকানো সম্ভব নয়।”
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৬ জনের মধ্যে সাতজনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনরা।
রূপনগর থানা পুলিশ জানিয়েছে, শনাক্ত লাশগুলোর ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে রূপনগর থানার ওসি (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত সাতটি লাশের দাবিদার পাওয়া গেছে এবং আরও স্বজন লাশ শনাক্তের জন্য আসছেন। ময়নাতদন্তের সময় লাশের পাশাপাশি স্বজনদের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা হবে। এরপর যেগুলো নিশ্চিতভাবে শনাক্ত হবে, সেগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।









