ভারতের রাজস্থানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন যাত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে জয়সালমের থেকে যোধপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। আগুনে আরও অন্তত ১৫ জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, বাসটিতে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে জয়সালমের থেকে যাত্রা শুরু করার পর জয়সালমের–যোধপুর হাইওয়ের মাঝপথে বাসের পেছন দিক থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। চালক তা বুঝতে পেরে বাস থামালেও মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা ও পথচারীরা দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করেন এবং দমকল ও পুলিশকে খবর দেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের দল পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে বহু যাত্রী পুড়ে মারা যান।
প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, বাসে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। জানা গেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি মাত্র পাঁচ দিন আগে কেনা হয়েছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা রাতে জয়সালমেরে পৌঁছে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের খোঁজখবর নেন।
জয়সালমের জেলা প্রশাসন জানায়, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়। জেলা কালেক্টর প্রতাপ সিং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দেন এবং একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়। গুরুতর আহতদের মধ্যে অনেকের শরীরের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। তাদের জয়সালমেরের জওহর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য যোধপুর পাঠানো হয়েছে।
আহতদের দ্রুত স্থানান্তরের জন্য জাতীয় সড়ক ১২৫–এ তৈরি করা হয় ‘গ্রিন করিডোর’। পুলিশের সহায়তায় আটটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীদের স্থানান্তর করা হয়।
জেলা প্রশাসক জানান, আগুনে পুড়ে বাসটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং অনেক মরদেহ চেনার অযোগ্য হয়ে গেছে। যোধপুর থেকে ডিএনএ ও ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে মরদেহ শনাক্তে সহায়তার জন্য। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাজস্থানের জয়সালমেরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”









