আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের—জরিপে এমনই মত দিয়েছেন দেশের বড় অংশের মানুষ। প্রথম আলোর উদ্যোগে পরিচালিত কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেডের জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। জরিপের শিরোনাম ছিল— ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক–রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’।
জরিপে অংশ নেওয়া সাড়ে ৪৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, আগামী নির্বাচনের পর তারেক রহমানই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় ব্যক্তি। কখনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং কারাবন্দি অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির কার্যক্রম তারেক রহমানই পরিচালনা করছেন। বিএনপির নেতারাও মনে করেন, দল জয়ী হলে তিনিই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তিনবার প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবার বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করা খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জরিপ বলছে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগ্রহের হার যোগ করলে তা দাঁড়ায় প্রায় ৬৬ শতাংশে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে দেখছেন প্রায় ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। অতীতে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি কখনো বিজয়ী হতে পারেননি।
জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে ৭ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ মনে করেন, তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে বয়স, আইনি জটিলতা ও সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। উল্লেখ্য, জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার আগেই।
এ ছাড়া শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং শূন্য দশমিক ২ শতাংশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি. এম. কাদেরকে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছেন।
দেশের পাঁচটি নগর ও পাঁচটি গ্রাম/আধা-শহর এলাকায় ১৮–৫৫ বছর বয়সী মোট ১,৩৪২ জনের মতামত নিয়ে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরুষ ৬৭৪ জন এবং নারী ৬৬৮ জন। তথ্য সংগ্রহ করা হয় ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এটি একটি প্রতিনিধিত্বমূলক জনমত জরিপ হলেও নির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। অংশগ্রহণকারীরা অনলাইন বা ছাপা পত্রিকা পাঠে অভ্যস্ত এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনাময় ভোটার।
দেশের জন্য কে প্রধানমন্ত্রী হলে ভালো হবে—জরিপে এমন প্রশ্নে প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষ তারেক রহমানের পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রায় ৩২ শতাংশ মনে করেন, দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে। প্রায় ২১ শতাংশ উত্তরদাতা খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। শেখ হাসিনার বেলায় এই হার ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। নাহিদ ইসলাম এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের জন্য উত্তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখেছেন শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ।









