ভারতের পর্যটন রাজ্য গোয়ার একটি জনপ্রিয় নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পর্যটকসহ অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৫০ জন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উত্তর গোয়ার আরপোরা শহরের ‘ব্রিচ বাই রোমিও লেন’ নাইটক্লাবে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে তিন থেকে চারজন বিদেশি ও স্থানীয় পর্যটক এবং বাকি ১৯ জন ক্লাবের কর্মী। আহতদের গোয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গোয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) জানান, শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল রান্নাঘরের কাছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে পরিদর্শনে দেখা গেছে সিলিন্ডার অক্ষত ছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে ভেতরে থাকা অনেকেই বের হওয়ার সুযোগ পাননি।
নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের সঠিক সংখ্যা ও অবস্থা সম্পর্কে প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানায়নি। নিহতদের পরিচয় নিশ্চিতকরণ ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ চলছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে ক্লাবটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগ, আগুন-নিরাপত্তা মানদণ্ড এবং জরুরি নির্গমনপথসহ সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ডিজিপি। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল বাহিনী। আপাতত ক্লাবটি সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্লাবটি অগ্নি নিরাপত্তার নিয়ম যথাযথভাবে মানেনি।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ড. প্রমোদ সাওয়ান্ত ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ উল্লেখ করে বলেন, আগুন লাগার কারণ নির্ণয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ক্লাবটি বিল্ডিং কোড ও অগ্নি নিরাপত্তা বিধি মেনে চলেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু গভীর শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ উল্লেখ করেন এবং নিহত-আহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনীয় সব সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সহায়তা তহবিল থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য ২ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে।









