লিবিয়ার উপকূলে অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে অন্তত চার বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত উপকূলীয় শহর আল-খোমসের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ডুবে যাওয়া প্রথম নৌকাটিতে ২৬ জন বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় নৌকাটিতে ৬৯ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে দু’জন মিসরীয় এবং বাকিরা সুদানি নাগরিক। তবে এ নৌকার যাত্রীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে—তা এখনও জানায়নি রেড ক্রিসেন্ট। নৌকাটিতে আটজন শিশু ছিল বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সংস্থাটির প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, কালো প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়ানো লাশগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। অন্য ছবিতে স্বেচ্ছাসেবীরা জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। উদ্ধারকৃতদের অনেককে থার্মাল কম্বল জড়িয়ে মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যায়।
রেড ক্রিসেন্ট আরও জানায়, স্থানীয় কোস্টগার্ড ও আল-খোমস বন্দর নিরাপত্তা সংস্থা উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। শহরের পাবলিক প্রসিকিউশনের নির্দেশনায় উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, আল বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে একটি রাবারের নৌকা ডুবে অন্তত ৪২ জন নিখোঁজ হয়েছেন এবং তাদের সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি লিবিয়ার উপকূলে অভিবাসন–সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। গত অক্টোবরেই ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূলে ৬১ জন অভিবাসীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরও আগে সেপ্টেম্বরে আইওএম জানায়, ৭৫ জন সুদানি শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকায় আগুন ধরে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়।
২০১১ সালে ন্যাটোর সমর্থনে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে লিবিয়া ইউরোপগামী অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে।









