২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে টানা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। একই সঙ্গে আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার তারা শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভূখা মিছিল’-এর ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, শিক্ষকরা খালি থালা ও প্লেট হাতে নিয়ে প্রতীকী এই মিছিল করবেন, যা তাদের বঞ্চনা ও অবহেলার প্রতিবাদ বহন করবে।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, “আমরা জাতির মেরুদণ্ড গড়ে তুলি, কিন্তু নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও মর্যাদার নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে শুধু প্রতিশ্রুতি শুনেছি, বাস্তবে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখন এমন এক পরিস্থিতি এসেছে, যেখানে খালি থালা হাতে রাস্তায় নামা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এটা কেবল প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, এটা আমাদের অন্তরের কান্না—বঞ্চনা ও অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। সরকার চাইলে আজই এ সংকটের সমাধান করতে পারে। শিক্ষক সমাজ মর্যাদা চায়, করুণা নয়।”
বাড়িভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িয়ে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে সেই প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর শিক্ষক সমাজে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এরপর ১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান শুরু করেন। সেদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই অনশন ও বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৩ অক্টোবর থেকে টানা কর্মবিরতি চলছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা (বোনাস) প্রদান।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।









