ঘন ঘন জ্বর নিউমোনিয়ার লক্ষণ কি না বুঝবেন কী ভাবে?

শীতকালেই মূলত এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে, যার নাম নিউমোনিয়া। ৬০ থেকে ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে অথবা চার বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় বেশি। কিন্তু এখ যে ভাবে দূষণের প্রকোপ বেড়েছে, তাতে নিউমোনিয়া হানা দিতে পারে যে কোনও মরসুমেই। এই বর্ষায় অনেকেই সর্দি-কাশি, জ্বরে ভুগছেন। ওষুধ খেয়েও তা সারতে অনেক সময় লাগছে। জ্বর কমলেও থেকে যাচ্ছে কাশি। সঙ্গে শ্বাসের সমস্যাও হচ্ছে অনেকের। এমন পরিস্থিতিতে তা সাধারণ জ্বর বা নিউমোনিয়া বুঝবেন কী উপায়ে?

নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। এই রোগে ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষে‌ত্রে জলও জমতে পারে। সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ভাইরাসের সংক্রমণে নিউমোনিয়া হয়। যেমন, স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি নামের ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ নিউমোনিয়া রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ। সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে নিউমোনিয়ার তফাত আছে। নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর। তার সঙ্গে কাশি। পাশাপাশি, শ্বাসকষ্টও থাকে। সংক্রমণ যত বাড়ে, শ্বাসকষ্টও বাড়তে থাকে। বুকে ব্যথা হতে পারে। বুকের ব্যথার এই ধরন তবে একটু আলাদা। সাধারণত, গভীর শ্বাস নেওয়ার সময়ে এই বুকের ব্যথা অনুভূত হবে। ফুসফুসের প্রদাহের কারণে এই ব্যথা হয়। এ ছাড়া, মাথায় যন্ত্রণা, ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অনীহা, সারাক্ষণ বমি বমি ভাবও আনুষঙ্গিক লক্ষণের মধ্যে পড়ে।

মেডিসিনের চিকিৎসক জানাচ্ছেন, সাধারণ সর্দি বা জ্বর ওষুধে সেরে যায়। কিন্তু নিউমোনিয়া সারতে সময় লাগে। আর নিউমোনিয়া কী থেকে হচ্ছে, অর্থাৎ ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া না ছত্রাক, তা আগে বোঝা জরুরি। সে জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। না বুঝেই অ্যান্টিবায়োটিক খেতে থাকলে হিতে বিপরীত হবে।

শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবাকে আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে। ঠান্ডা লাগলেও শিশু স্বাভাবিক আছে কি না, খুব দুর্বল হয়ে পড়ছে কি না, ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছে কি না, সাধারণ ভাবে খেলাধুলো করছে কি না অতিরিক্ত কান্নাকাটি করছে কি না, তা খেয়াল করতে হবে। যদি দুর্বলতা বাড়ে ও শিশুর শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

শিশুদের বেলায় আগাম রোগ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া হয়। নিউমোনিয়ার টিকা সাধারণত দু’প্রকারের হয়। বছরে এক বার নেওয়া যেতে পারে। আবার পাঁচ বছর অন্তর বুস্টার ডোজেও নেওয়া যায় নিউমোনিয়ার টিকা। যাঁরা ইতিমধ্যেই নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত বা আক্রান্ত হতে পারেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে অন্য ধরনের টিকা দেওয়া হয়। তবে সব টিকা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই দরকার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *