গণঅভ্যুত্থানের পর দেশত্যাগী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার পুনঃযাচাই করতে গিয়ে দুদক একক লকারে একটি খালি পাটের ব্যাগ এবং পারিবারিক যৌথ দুই লকারে মোট ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) তিনটি লকার পরীক্ষা শেষে বিকেলে এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, কমিশনের অনুমোদন নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা আদালতে লকার পুনঃযাচাইয়ের আবেদন করেছিলেন। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর মঙ্গলবার ছয় সদস্যের একটি যৌথ দল লকারগুলো পরীক্ষা করে। দলে ছিলেন একজন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, দুদকের তদারকি কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার একজন স্বর্ণবিশেষজ্ঞ, এনবিআরের কর গোয়েন্দা–সিআইসি মনোনীত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রতিনিধিরা।
দুদক জানায়, শেখ হাসিনার নামে পূবালী ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল করপোরেট শাখার লকার নম্বর–১২৮ খোলা হলে সেখানে শুধু একটি খালি পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়। অগ্রণী ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের যৌথ লকার (নম্বর–৭৫১) থেকে ৪ হাজার ৯২৩ দশমিক ৬০ গ্রাম (৪২২ দশমিক ২৬ ভরি) এবং একই শাখায় শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার যৌথ লকার (নম্বর–৭৫৩) থেকে ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম (৪১০ দশমিক ২৫ ভরি) স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে উদ্ধার সোনা ৮৩২ ভরি।
অনুসন্ধান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দুদক জানায়, স্বর্ণালংকারগুলোর সঙ্গে থাকা বিভিন্ন চিরকুটে এগুলো শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নামে উল্লেখ রয়েছে। প্রতিটি গয়নায় আলাদা চিরকুট ব্যবহার করা হয়েছে।
যৌথ লকারে থাকা সোনার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অংশ কতটুকু— এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক মহাপরিচালক বলেন, প্রতিটি গয়নার সঙ্গে আলাদা নাম থাকার কারণে যাচাই-বাছাই করতে সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরীক্ষা করে দেখবেন কোন নামে কতটুকু সোনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতেই এসব লকারের উল্লেখ ছিল। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার আবেদন করে দুদক।









