২২ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ভারতকে হারালো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক

রেফারির শেষ বাঁশির অপেক্ষায় গোটা জাতীয় স্টেডিয়াম। রেফারি বাঁশি বাজালেন, আনন্দে কেঁপে উঠল পুরো গ্যালারি। ফুটবলাররা তখন আত্মহারা। ভারতের বিপক্ষে এই প্রজন্ম জয় দেখেনি। ২২ বছরের অপেক্ষা। অবশেষে শেষ হলো। আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। পেয়েছে অধরা জয়ের দেখা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আগ্রাসী ভারত মরিয়া হয়ে ওঠে গোলের জন্য। প্রথম ১৫ মিনিট বাংলাদেশের রক্ষণকে রাখে ব্যতিব্যস্ত। তবে, রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় বিপদ ঘটেনি।

৬৫ মিনিটে কাউন্টার এটাকে সাজানো এক আক্রমণ করে বাংলাদেশ। নিচ থেকে একটু একটু করে ওপরে উঠলেও গোলে রূপান্তর না করার আক্ষেপ থেকেই যায়।

৭৮ মিনিটে আক্রমণে ওঠেন শাকিল আহাদ তপু ফাঁকা পেয়ে টেনে নেন বল। দূরপাল্লার শট দিলেও বিচক্ষণ ভারতীয় গোলরক্ষক সান্ধু সেটি প্রতিহত করেন।

৯২ মিনিটে আবার সমতা ফেরানোর সম্ভাবনা জাগায় ভারত। মিতুল মারমা লাফিয়ে উঠে ম্যাচে নিজের সেরা সেইভ দেন। রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ৯৬ মিনিটে সবার মাথায় হাত। এবারও জটলায় মিতুল দক্ষতায় বুকে জড়িয়ে নিলেন বল। বাংলাদেশ হলো নিরাপদ, পেল জয়ের দেখা।

সন্ধ্যায় ঝাঁঝালো লড়াইয়ের আভাসে শুরু হয় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। জয়ের খরা কাটাতে এই ম্যাচে চোখ বাংলাদেশের। জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে স্বাগতিকরা খেলেছে সেই ক্ষুধা নিয়ে। একের পর এক আক্রমণে ভারতকে কোণঠাসা করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গোল অবশ্য হয়েছে কেবল একটি। প্রথমার্ধ শেষে সেই ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।

ম্যাচের বয়স তখন ১১ মিনিট। মাঝমাঠ থেকে একাই টানলেন রাকিব হোসেন।  বামপ্রান্ত থেকে তার ক্ষিপ্র গতির কাছে পরাস্ত হয় ভারতের দুই ডিফেন্ডার। এক পর্যায়ে তাকে ফেলে দিলেন ততক্ষণে রাকিব বল ঠেলে দিলেন শেখ মোরসালিনের দিকে। মোরসালিন কালক্ষেপণ করেননি। ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দুই পায়ের ফাঁক গলে জালে পাঠান মোরসালিন।

এগিয়ে যাওয়ার পর রাকিব আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন। এবার ডান দিকে থেকে ক্রস। সেটি লুফে নিতে ভুল করেননি সান্ধু। মোরসালিনের কাছে পৌঁছানোর আগেই থামে আক্রমণ।

৩১ মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়েই এনেছিল ভারত। গোলপোস্ট ছেড়ে বাইরে চলে গেছেন মিতুল মারমা। অরক্ষিত গোলপোস্টে শট নেন ভারতীয় মিডফিল্ডার লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। সবাই যখন নিশ্চিত গোল ধরে নিয়েছিল, দৃশ্যপটে তখন হামজা চৌধুরী। একাই দাঁড়িয়ে গেলেন। দুরন্ত হেডারে ক্লিয়ার করলেন বল। বেঁচে গেল বাংলাদেশ।

৩৫ মিনিটে মাঠে উত্তেজনা। তপু বর্মনের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়ায় ভারতীয় ফুটবলার। এরপর দুদলের হাতাহাতি। খেলা শুরু হলে কয়েকটি সুযোগ তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করে ভারত। বাংলাদেশও কয়েকবার পাল্টা আক্রমণ শানায়। কখনও ডানদিক, কখনও বামে।

৪৪ মিনিটে হামজা ব্যবধান দ্বিগুণ প্রায় করেই ফেলেছিলেন। সাদ উদ্দিনের দেওয়া লব ভারতের ডি বক্সের সামনে বুক দিয়ে রিসিভ করেন হামজা। সামনে প্রতিপক্ষ রক্ষণের তিনজন। ভড়কে না গিয় বাঁ’পায়ে শট নেন হামজা। বারপোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় সেটি। অল্পের জন্য রক্ষা পায় ভারত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর