রাজশাহীতে বিচারকের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে হত্যার মামলায় হেফাজতে থাকা আসামি লিমন মিয়ার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান এ আদেশ জারি করেন।
বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ সদস্য হলেন—রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু শাহাদাত, কনস্টেবল আব্দুস সবুর, মাহফুজার রহমান এবং মিঠু সরদার। ঘটনার পর তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আরএমপির মুখপাত্র ও উপপুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান জানান, দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণেই তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্তের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে বরখাস্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এর আগে শনিবার সকালে হেফাজতে থাকা আসামিকে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিতে দেওয়ার ঘটনায় আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে নোটিশ দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম জানান, রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ নোটিশ জারি করে পুলিশ কমিশনারকে ১৯ নভেম্বর আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়, ১৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকেও হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকেই লিমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম আরও বলেন, হেফাজতে থাকা অবস্থায় আসামির বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার লঙ্ঘন, যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মামলায় স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান জানিয়েছেন, বিকেল পর্যন্ত আদালতের নোটিশ আরএমপি সদর দপ্তরে পৌঁছায়নি। তবে নির্দেশনা পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার নগরীর ডাবতলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে বিচারকের নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে তাওসিফ খুন হন। হামলায় আহত হন বিচারকের স্ত্রীও। ধস্তাধস্তির সময় হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত হন এবং পরে তিনি পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে কথা বলেছিলেন—যার ভিডিও প্রকাশিত হয়।









