বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করলেও প্রতিদিনের জীবন সব সময় মসৃণভাবে চলে না। নানা কারণে দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝি, অভিমান আর মতবিরোধ দেখা দেয়। এসব সমস্যা সময়মতো বুঝে না নিলে সম্পর্কের ভেতরে তৈরি হয় দূরত্ব।
দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া বাড়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো—
প্রথমত, বোঝাপড়ার ঘাটতি। অনেক সময় সঙ্গীর কাছ থেকে কিছু আশা থাকলেও সেটা স্পষ্টভাবে না বললে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। যেমন, স্ত্রী চান স্বামী তার খোঁজ নিক, কিন্তু স্বামী মনে করেন তাকে একা থাকতে দেওয়া ভালো।
দ্বিতীয়ত, টাকার হিসাব নিয়ে টানাপোড়েন। আয়-ব্যয়ের অভ্যাস ভিন্ন হলে বা খরচের জায়গা নিয়ে মত না মিললে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
তৃতীয়ত, একে অপরকে সময় না দেওয়া। ব্যস্ততা থাকলেও প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটানো দরকার, নইলে সম্পর্ক শিথিল হয়ে যায়।
চতুর্থত, সন্দেহ ও ঈর্ষা। সঙ্গীর সাফল্যে খুশি না হয়ে ঈর্ষান্বিত হওয়া কিংবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অকারণ সন্দেহ সম্পর্ককে নষ্ট করে।
পঞ্চমত, শারীরিক দূরত্ব। দাম্পত্য সম্পর্কে ঘনিষ্ঠতার অভাব হলে ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
ষষ্ঠত, দায়িত্ব ভাগাভাগিতে অসাম্য। সংসারের কাজ বা সিদ্ধান্ত একতরফা হলে অসন্তোষ তৈরি হয়।
সপ্তমত, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মতের অমিল। সন্তান, বসবাস বা ক্যারিয়ার নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতা না হলে অশান্তি বাড়ে।
অষ্টমত, বাইরের লোকের হস্তক্ষেপ। দাম্পত্য সমস্যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই সমাধান করা উত্তম। অন্যদের হস্তক্ষেপে জটিলতা বেড়ে যায়।
নবমত, ব্যক্তিত্বের পার্থক্য। একজন প্রাণচঞ্চল, অন্যজন শান্ত হলে পারস্পরিক সম্মান না থাকলে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
দশমত, পুরোনো ঝগড়ার রেশ। আগে সমাধান না হওয়া ঝগড়াগুলো ক্ষোভ জমিয়ে রাখে এবং ছোট বিষয় থেকেও বড় সমস্যার জন্ম দেয়।
সবশেষে বলা যায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে কেন ঝগড়া হচ্ছে, সেটা বুঝতে পারলে সমাধান খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। সম্পর্ক শুধু সুখের সময় নয়, কঠিন সময়েও একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতির নাম।









