লাশ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

বিয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় কুমিল্লার সদর দক্ষিণে আবু বক্কর প্রকাশ আসিফ (২৫) নামে এক যুবককে স্ত্রীর সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী মরদেহ নিয়ে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে চৌদ্দগ্রাম মডেল থানা ও মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

নিহত আসিফ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কেন্ডা গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার ছেলে। পরিবারের দাবি, নববধূর (১৯) সাবেক প্রেমিক রাব্বি ওরফে বাপ্পি এবং পারভেজ নামে দুই যুবক তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর আসিফ সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে সন্ধ্যায় অলির বাজার এলাকায় দুই যুবক তাকে অতর্কিতে ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন বলেন, “আমার ভাই দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। দেশে ফিরে ২৭ অক্টোবর বিয়ে করেন। আমরা পরে জানতে পারি, ভাবির সঙ্গে বাপ্পির পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের জেরে আসিফকে হত্যা করা হয়েছে।” আরাফাত আরও জানান, “ভাবি ঘটনাটি অন্যদিকে নিতে সদর দক্ষিণ থানায় ছুরিকাঘাতের মামলা করেন। আমরা ভাবিকেও আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করব।”

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী দাবি করেন, নববধূর উসকানিতেই তার সাবেক প্রেমিকরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে তিনি মামলায় ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন।

অন্যদিকে নববধূর বাবা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার মেয়ে কোনোভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তার আগে কোনো প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। আমরা প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি চাই।”

অবরোধ চলাকালে নিহত আসিফের মা আলেয়া বেগম, নানি রুপিয়া বেগমসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়ায় জনতা মহাসড়ক থেকে সরে আসে।”

সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম জানান, “ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা পলাতক হয়। তাদের গ্রেপ্তারে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *