যৌতুক দিতে না পারায় স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ষ্টাফ রিপোর্টার

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে মো. রুবেলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৪–এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের বিবরণে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁচগাঁও বটতলার ভাড়া বাসায় ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে রুবেল স্ত্রী রিয়া আক্তারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি মরদেহ ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে দরজায় তালা দেন এবং তাদের শিশুকন্যাকে তার খালা হাজেরার কাছে পৌঁছে দিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

মামলার বাদী রিয়ার বাবা মোতালেব জানান, হাজেরার ফোন পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা মেয়ের মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহ মর্গে পাঠায় এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জুলফিকার আলী সরকার ঘটনাস্থলের মানচিত্র অঙ্কন, আলামত জব্দ, সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্ত চলাকালে রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দেন। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

রায়ে বিচারক বলেন, “সাক্ষ্য–প্রমাণে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ভিকটিম আত্মহত্যা করেছেন— আসামির এ দাবি ডিফেন্সে টেকসই হয়নি।”

আদালত সূত্র জানায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০–এর ১১(ক) ধারায় রুবেলকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। অর্থদণ্ড আদায়ে তার স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সেই অর্থ তুলে দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।

রায় ঘোষণার পর আসামিকে সাজা–পরোয়ানায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নথি সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর