বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে। পঞ্চমীতে বোধন এবং ষষ্ঠী তিথিতে আমন্ত্রণ-অধিবাস ও ষষ্ঠীবিহিত পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মহাসপ্তমীর মাধ্যমে মূল পূজা শুরু হয়েছে। এই তিথি থেকেই দেবীর অন্নভোগ শুরু হয়, আর জাগ্রত হন দেবী দুর্গা, যিনি দশ হাতে দমন করবেন অশুভ ও অমঙ্গলকে।
সোমবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। মন্ত্রোচ্চারণ, ধূপ ও আরতির মধ্য দিয়ে সারাদিন চলবে মহামায়ার বন্দনা।
এবার দেবী দুর্গা এসেছেন গজে (হাতি) চড়ে, যা হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। তবে তিনি বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে, যা মহামারি, খরা, যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ইঙ্গিতবাহী বলে ধরা হয়।
মহাসপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্থাপন করা হয়। নয়টি ভিন্ন গাছের পাতা—কলা, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান—একত্রে সাজিয়ে কলাগাছে বেঁধে, লালপাড় সাদা শাড়ি পরিয়ে বধূর মতো রূপ দেওয়া হয়। এটি ‘কলাবউ’ নামে পরিচিত। নবপত্রিকা দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ রূপের প্রতীক। নবপত্রিকা প্রবেশের পর অনুষ্ঠিত হয় দেবীর মহাস্নান, যেখানে প্রতিমার আয়নায় প্রতিফলিত প্রতিবিম্বে দেবীকে স্নান করানো হয়।
শনিবার বোধনের পর থেকে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে পর্যায়ক্রমে। আগামী ২ অক্টোবর মহাদশমী পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে এবারের দুর্গোৎসবের।
এবার ঢাকায় মোট ২৫৯টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা গতবারের তুলনায় সাতটি বেশি। সারা দেশে মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৩৫৫-এ, যা গতবারের তুলনায় এক হাজারেরও বেশি।









