বিদেশিদের হাতে যাচ্ছে কক্সবাজার রেলস্টেশন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

দেশের প্রথম আন্তর্জাতিকমানের কক্সবাজার রেলস্টেশন উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয়নি। আধুনিক অবকাঠামো ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা থাকা সত্ত্বেও ইজারা বা বরাদ্দ না দেওয়ায় স্টেশনের বিভিন্ন স্থাপনা অচল অবস্থায় পড়ে আছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিপুল পরিচালন ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্টেশনটি পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এবং সে উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে।

২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করেন। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ‘পর্যটক’ ও ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামে দুটি ট্রেন চালু হয়। তবে দুই বছর পার হলেও স্টেশনের পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়নি।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কক্সবাজার রেলস্টেশন সম্পূর্ণভাবে চালু হলে প্রতি মাসে ইউটিলিটি খাতে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। এই ব্যয়ভার নিজেদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় বলেই তৃতীয় পক্ষের হাতে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।

২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছয়তলা বিশিষ্ট এই আধুনিক ভবনটি বাইরে থেকে একটি বিলাসবহুল স্থাপনার মতো দেখতে। কাচঘেরা নকশা, আইকনিক ঢংয়ের ছাদ, এবং প্রতিটি তলায় ভিন্ন ভিন্ন বাণিজ্যিক সুবিধা থাকলেও সেগুলোর কোনোটি এখনো ব্যবহারযোগ্য হয়নি।

রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এ বিষয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে, যেখানে অংশ নিতে পারবে পাঁচতারকা হোটেল বা আন্তর্জাতিক স্থাপনা পরিচালনায় অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) অংশ নিতে পারবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “আমরা চাই, দক্ষ ও অভিজ্ঞ কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার রেলস্টেশনের দায়িত্ব নিক। তবে দেশীয় প্রতিষ্ঠান চাইলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে অংশ নিতে পারবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই দরপত্র প্রকাশ করা হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *