চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের আকাশে শেষ বেলায় দেখা দিয়েছে কালো মেঘ। এর কারণে হয়েছে আলোর স্বল্পতা। ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অল্প আলোতে আম্পায়ার খেলা চালিয়ে নেওয়ার পক্ষে নন। দুই দলের খেলোয়াড়েরাই মাঠ ছেড়েছে। খেলা আপাতত বন্ধ। এ সময় দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭.২ ওভারে ৪ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ১৫৮ রান।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে ভারত। ৫১৪ রানে লিড নেওয়া দলটি বাংলাদেশকে ৫১৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। রোহিত শর্মা ইনিংস ঘোষণার সময় শুবমান গিল ১১৯ রানে ও লোকেশ রাহুল ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
টেস্টে বাংলাদেশ এর চেয়ে বড় রানের লক্ষ্য পেয়েছে তিনবার। সব মিলিয়ে চতুর্থ ইনিংসে নবমবার ৫০০ রানের বেশি লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ। সবগুলো ম্যাচই হেরেছে বাংলাদেশ।
টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ২১৫ রান তাড়া করে জিতেছে ২০০৯ সালে গ্রেনাডার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
১৪৯ রানে অলআউট বাংলাদেশ, ব্যটিংয়ে ভারত
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৪৯ রানে। ভারতের প্রথম ইনিংস থেকে ২২৭ রান পিছিয়ে বাংলাদেশ দল।
ফলোঅন এড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ—প্রশ্নটি বাংলাদেশের ইনিংসের প্রায় শুরু থেকেই উঠেছে। ব্যাটসম্যানদের একের পর এক ভুল শট খেলায় শেষ পর্যন্ত ফলোঅনের সীমানা পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও ভারত ফলোঅন করায়নি।
দ্বিতীয় দিন সকালে আজ ভারতকে ৩৭৬ রানে অলআউট করে দিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। যশপ্রীত বুমরার করা ইনিংসের প্রথম ডেলিভারিটি ছিল লেগ সাইডে। সেটি দেখেশুনে ছেড়ে দেন সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় বলে নেন ২ রান। পরের তিনটি বলও ভালোভাবে সামলে নেন সাদমান। মনে হচ্ছিল, শুরুটা বাংলাদেশ ভালোই করতে যাচ্ছে। কিন্তু বুমরার ষষ্ঠ ডেলিভারিটি আর সামলাতে পারেননি তিনি।
অফ স্টাম্পের ওপর লেংথ ডেলিভারি ছিল। সাদমান অফ স্টাম্প কাভার না করেই ছেড়ে দেন সেটি। বল অফ স্টাম্প থেকে আরেকটু ভেতরে ঢুকে মিডল স্টাম্পের চূড়ায় লেগে তুলে নেয় বেলস। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন উইকেটে এসে চেষ্টা করেন জাকির হাসানকে নিয়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলাতে। কিন্তু সেটা বাংলাদেশ পারল কই! আকাশ দীপের পরপর দুই বলে জাকির ও মুমিনুল হককে হারিয়ে বরং আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
অশ্বিন-জাদেজার ফিফটিতে ব্যকফুটে বাংলাদেশ
চেন্নাই টেস্টের প্রথম সেশনে ৮৮ রানের বিনিময়ে ভারতের ৩টি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনেও ঠিক একই সমীকরণ, ৮৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট। যার ফলে বোর্ডে ১৭৬ রান জড়ো করতেই ৬ উইকেট খোয়ায় ভারত। যার মধ্যে ৪টিই ঝুলিতে পোরেন পেসার হাসান মাহমুদ।
অর্থাৎ পাকিস্তান সিরিজের পর ভারতের মাটিতেও দাপট ধরে রাখে টাইগার বোলাররা।
তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবিন্দ্র জাদেজার ব্যাটে এরপরই যেন ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। পালটা আক্রমণে দারুণ জুটি বেঁধে বাংলাদেশি বোলারদের সামনে রীতিমত বাধার পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছেন এ দুজন। তুলে নিয়েছেন নিজ নিজ ফিফটিও।
সেই সঙ্গে শেষ সেশনে ইতোমধ্যেই দুজনে গড়ে ফেলেছেন ১৩৯ রানের অনবদ্য জুটি। যে জুটিতে চড়ে ভারতও সব শঙ্কা পার করে এখন রীতিমত স্বস্তিদায়ক অবস্থানে। ৬ উইকেটে তাদের সংগ্রহ এখন ২৮৫।
অতি প্রয়োজনের সময় দাপুটে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকালেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৬টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরানের গণ্ডি টপকে যান তিনি। ৯টি চার ও ১টি ছক্কার মারে অপরাজিত আছেন ৮০ রানে।
অন্যদিকে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা। অপরাজিত আছেন ৫৬ রানে।
এর আগে অবশ্য চেন্নাই টেস্টের শুরুতেই স্বাগতিক ভারতকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৩৪ রানে ৩ উইকেট তুলে নেওয়ার পর ১৪৪ রানে তুলে নিয়েছিল ৬ উইকেট। পেয়ে গিয়েছিল ভারতের লেজের দেখা। তবে সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবিন্দ্র জাদেজা।