বিদেশ ভ্রমণে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য দিন দিন বাড়ছে ভিসা সংকট ও নানা জটিলতা। বিশেষ করে পর্যটন ভিসা পেতে হিমশিম খাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ফলে পরিকল্পিত ভ্রমণ এখন বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
শুধু ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা কানাডা নয়, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও ভিসা পাওয়া এখন প্রায় সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। সরকারি পরিবর্তনের পর থেকে ভিসা জটিলতা আরও প্রকট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত চিকিৎসা ভিসা দিলেও ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করে দেয়। দুবাই, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান ও কাতারেও ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়া ভ্রমণ ভিসার ক্ষেত্রে দিয়েছে কঠোর শর্ত। চীনে ভিসা পাওয়া গেলেও বিমানবন্দরে যাচাই-বাছাইয়ে অনেকে ফেরত আসতে বাধ্য হচ্ছেন। থাইল্যান্ডে ভিসা পেতে সময় লাগছে বেশি, আর মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশনে সন্দেহজনক মনে হলে পর্যটককে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভ্রমণ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনের পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত কাগজপত্র, দীর্ঘসূত্রতা ও অনাস্থার কারণে প্রকৃত পর্যটকরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হোটেল ভাড়া, নিরাপত্তাহীনতা এবং পর্যাপ্ত বিনোদন সুবিধার অভাব। সব মিলিয়ে অনেকের কাছে বিদেশ ভ্রমণ এখন স্বপ্নভঙ্গের সমান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদেশে গিয়ে অবৈধভাবে অবস্থান, ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার, এবং বিভিন্ন দেশের নীতির পরিবর্তন—এসব কারণে বাংলাদেশিদের ভিসা বাতিল বা রিজেকশনের হার বেড়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, “ভিসা দেওয়া না দেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট দেশের। তবে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কও এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।”
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভিসা নীতি প্রতিটি দেশ তাদের মতো করে ঠিক করে। তবে বাংলাদেশি নাগরিকদের কর্মী, শিক্ষা ও পর্যটনসহ বিভিন্ন ভিসা সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে।









