পরপর ৩ জুমা না পড়লে আল্লাহ অন্তরে মোহর এঁটে দেন

আজাদ নিউজ ডেস্ক

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন কেবল তাঁর ইবাদতের জন্য। আর ইবাদতের শ্রেষ্ঠ রূপ হলো নামাজ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।” অর্থাৎ, নামাজ ছাড়া ধর্মীয় ভিত্তি দৃঢ় হয় না।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন—
“তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম কর এবং ফজরের নামাজও কায়েম কর; নিশ্চয়ই ফজরের নামাজে উপস্থিতি (সমাবেশ) ঘটে।”
— (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৭৮)

প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করে। নামাজের মাধ্যমে সমাজে শ্রেণি-বৈষম্য দূর হয়, ধনী-গরিব এক কাতারে দাঁড়িয়ে সমতার বার্তা দেয়, প্রতিষ্ঠিত হয় নববী সভ্যতার আদর্শ।

ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে জুমার নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল। দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব পাবে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে মিম্বারে ওঠেন, তখন ফেরেশতারা আর আমল লিখে না, তারা খুতবা শুনতে থাকে।”
— (বোখারি : হাদিস ৮৮১)

তবে জুমার নামাজ যেমন ফজিলতপূর্ণ, তেমনি অবহেলার ক্ষেত্রে কঠিন সতর্কবার্তাও এসেছে হাদিসে। নবীজি (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পরপর তিন জুমা ত্যাগ করে, আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন।”
— (তিরমিজি : ৫০০)

অন্য এক বর্ণনায় হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন—
“যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা ত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনে ফেলে দিয়েছে।”
— (মুসলিম)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, চার শ্রেণির মানুষ ছাড়া জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। এ চার শ্রেণি হলো— দাস, নারী, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক এবং মুসাফির বা অসুস্থ ব্যক্তি।
— (আবু দাউদ)

নামাজ ত্যাগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামও কঠোর সতর্কতা দিয়েছেন। হজরত উমর (রা.) বলেছেন, “যে নামাজ ত্যাগ করে, সে নিশ্চিতভাবেই কাফের।”
আর হজরত আলি (রা.) বলেছেন, “যে নামাজ পড়ে না, সে কাফের।”
— (বায়হাকি : ১৫৫৯, ৬২৯১)

কোরআন ও হাদিসের আলোকে স্পষ্ট যে, নামাজ ত্যাগ করা শুধু অবহেলা নয়, এটি ইসলাম ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। তাই প্রতিটি মুসলমানের জন্য নিয়মিত নামাজ আদায় করা এবং বিশেষ করে জুমার নামাজকে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর