আ.লীগ রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন হলে পূর্ণ মুক্তি মিলবে: মীর্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে পারলে ফ্যাসিবাদ থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি মিলবে। আজ শুক্রবার (১ আগষ্ট) ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ’ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

লুটেরাদের সঙ্গে কোনো আপস নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিরাট একটা ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে যখন তাদেরকে আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারব। যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা চাঁদাবাজি করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে নিয়ে যায়; তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো রকমের আপস থাকবে না। তাদেরকে আমরা কখনোই স্বীকার করব না এবং তাদেরকে আমরা কোনোমতেই সামনে আসতে দেব না।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সমাবেশে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নিরব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীরসহ শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকে অনেক কথা বলেন, অনেক ভুল আছে, ত্রুটি আছে, অভিজ্ঞতা বেশি নাই। আমি আশা করেছিলাম যে, এক বছরের মধ্যে আমাদের যারা শহীদ হয়েছে তাদের প্রকৃত তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। দুর্ভাগ্য তারা পুরোটা করতে পারেনি। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে। এই যে সংস্কারের বৈঠক, সে বৈঠক বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি, দুই-একদিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে।

তারেক রহমান দেশে আসবেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে যে আস্থা রেখেছিল জনগণ, একইভাবে আজকে তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর আস্থা রাখছে। অপেক্ষা করছি, কবে তারেক রহমান দেশে আসবেন। কবে নেতৃত্ব দেবেন? আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি যে, তারেক রহমান দ্রুত দেশে আসবেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেবেন- সেটাই আমাদের কামনা।

তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রতিদিন কথা বলছেন। প্রতিদিন তিনি বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন, তিনি বলছেন যে- আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করব। যে বাংলাদেশে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে, যে বাংলাদেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে, যে বাংলাদেশে সাধারণ গরিব মানুষ, সে গরিব থাকবে না, আস্তে আস্তে সে উন্নতির দিকে যাবে এবং বারবার করে বলেছেন যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আগামীতে তারেক রহমান নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ‘ফার্মাস কার্ড’, ‘স্বাস্থ্য কার্ড’, ‘ফ্যামিলি কার্ড’-ইত্যাদি পরিকল্পনা নিয়েছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস হচ্ছে, যে ঘোষণা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন- আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে, তাই না। এই নির্বাচনটা আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়, দেশের মানুষ একটা নির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশ পরিচালনা করতে চায়। আমার তো যাওয়ারই জায়গা নাই। এখন আমার কোনো সমস্যা হলে আমি কার কাছে যাব? কোনো এমপি নাই তো? আছে? তাহলে আমি যাব কার কাছে। আমার সমস্যাটা পার্লামেন্টে কে তুলে ধরবে? লোক নাই। কে পার্লামেন্টে আমার দাবি নিয়ে কথা বলবে? লোক নাই। এজন্যই আমাদের দ্রুত নির্বাচন দরকার, খুব দ্রুত পার্লামেন্ট দরকার। যে পার্লামেন্টে আমরা আমাদের কথাগুলো বলতে পারব।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর