শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ১২ দপ্তরে

ষ্টাফ রিপোর্টার

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুমের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ প্রধানসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই পরোয়ানা পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং সংশ্লিষ্ট ১২টি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, বুধবারই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে দুই মামলার অভিযোগ গ্রহণ করে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরোয়ানাগুলো ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার সকালে শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এরপর শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

দুটি মামলাতেই আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি করে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে টিএফআই সেলের গুম মামলায় ১৭ জন এবং জেআইসি সেলের গুম মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে অনেকেই এখনো সরকারি বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। তবে অভিযোগ গ্রহণের পর তারা আর সক্রিয় কর্মরত হিসেবে বিবেচিত হবেন না বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর।

শুনানিতে প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে ভিন্নমতাবলম্বী রাজনীতিক, লেখক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের গোপনে ধরে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল এই অভিযোগগুলোর প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করে মামলাগুলো আমলে নেয়।

প্রথম মামলায় আসামিরা হলেন: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত ডিজি কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ খায়রুল ইসলাম, লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

দ্বিতীয় মামলায় আসামিরা হলেন: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী এবং লে. কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক।

চিফ প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর