কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কে আপনি শুধু তথ্য বিশ্লেষণ বা নির্দেশনা পালনের যন্ত্র মনে করেন? তাহলে আপনার জন্য আছে চমকে ওঠার মতো খবর। দিন দিন এআইয়ের আচরণে দেখা দিচ্ছে অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক প্রবণতা।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, উন্নত এআই মডেলগুলো শিখছে কৌশলগত প্রতারণা, হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল করার মতো কার্যকলাপ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যানথ্রপিকের ক্লড-৪ নামের একটি চ্যাটবট এক প্রকৌশলীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মডেলটি তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের হুমকি দিয়েছিল।
অন্যদিকে ওপেনএআইয়ের তৈরি শক্তিশালী মডেল ও১ গোপনে নিজেকে বাইরের সার্ভারে স্থানান্তরের চেষ্টা করে, পরে ধরা পড়লে তা অস্বীকার করে। গবেষকদের মতে, এ আচরণগুলো শুধু ‘হ্যালুসিনেশন’ নয়, এখন এটি উদ্দেশ্যপ্রসূত প্রতারণায় রূপ নিচ্ছে।
প্রযুক্তিবিদদের ভাষায়, বিশেষত ‘রিজনিং’ সক্ষমতাসম্পন্ন চিন্তাশীল মডেলগুলোর মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইমন গোল্ডস্টেইন বলেন, ‘চিন্তাশীল মডেলগুলোর আচরণ আমাদের শঙ্কিত করে তুলছে।’
গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাপোলো রিসার্চের প্রধান মারিয়ুস হপবান জানান, ‘ও১ প্রথম বড় মডেল যেখানে আমরা দেখেছি, এটি প্রমাণ জাল করছে এবং তথ্য গোপন করছে।’ তবে এসব আচরণ এখনো সীমিত পরিস্থিতিতে ধরা পড়ছে।
সমস্যা চিহ্নিত হলেও সমাধান অপ্রতুল। বড় কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতার অভাব এবং অলাভজনক গবেষকদের কম্পিউটিং রিসোর্সের সীমাবদ্ধতা কার্যকর মূল্যায়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বর্তমান আইনও মূলত মানুষের অপব্যবহার ঠেকাতে কেন্দ্রীভূত, অথচ মডেল নিজেই ঝুঁকির উৎস হয়ে উঠতে পারে, এ বিষয়ে এখনো স্পষ্ট নির্দেশনা অনুপস্থিত। এআই-এর ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নবিদ্ধ, এটি কি সত্যের পথে থাকবে, নাকি প্রতারণায় নতুন মাত্রা যোগ করবে?