বেতন-ভাতা ও ভাতার প্রজ্ঞাপন জারিসহ নানা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে দেশের সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির কারণে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে অন্তত তিন শিক্ষক আহত হন এবং পাঁচজনকে আটক করা হয়। ওই ঘটনার পরেই শিক্ষক নেতারা সোমবার থেকে সারাদেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রংপুর, রাজশাহী, চাঁদপুর ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাতযাপন করা শিক্ষকরা সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। তারা জানিয়েছেন, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
এর আগে রোববার সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের শিক্ষকরা। পরবর্তীতে তাদের একটি প্রতিনিধিদল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে কর্মকর্তারা আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও, “আশ্বাস নয়, প্রজ্ঞাপন চাই”—এই স্লোগান তুলে রাজপথে অবস্থান ধরে রাখেন শিক্ষকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, দুপুর পৌনে ২টার দিকে শিক্ষকরা সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে পিরোজপুরের গণপতি হাওলাদার (৩২), কিশোরগঞ্জের শফিকুল ইসলাম কাজল (৪০) ও চাঁদপুরের আক্কাস আলী (৫৫) রয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি বলেন, “শিক্ষকদের ওপর পুলিশের এই ন্যক্কারজনক হামলা আমরা মেনে নিতে পারি না। দাবি আদায় ও প্রতিবাদে আজ থেকে সারাদেশে এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।”
সরকারি সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত শিক্ষকদের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।









