জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বিভিন্ন নামে চ্যানেল খুলে অশ্লীল ও নগ্ন ছবি-ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে সক্রিয় এমন ১০৮টি পর্নোগ্রাফি চ্যানেল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিটিআরসি জানিয়েছে, এসব চ্যানেলে অনুমতি ছাড়াই যৌন উদ্দীপক ও অশালীন কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে, যা দেশের সামাজিক মূল্যবোধ ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করছে। বিষয়টি জানিয়ে টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে দ্রুত চ্যানেলগুলো বন্ধ বা অপসারণের অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
চিঠিতে ১০৭টি চ্যানেলের আইডি ও কনটেন্ট লিংক সংযুক্ত করে বলা হয়, অভিযোগ যাচাইয়ের ভিত্তিতে এসব চ্যানেল শনাক্ত করা হয়েছে। এতে প্রাপ্তবয়স্ক অশ্লীলতা, যৌন কার্যকলাপ ও পর্নোগ্রাফিক উপাদান প্রচার করা হচ্ছে।
বিটিআরসি চিঠিতে উল্লেখ করে, ২০২৫ সালের সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশের ৮(১) ধারা অনুযায়ী অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ, ব্লক বা অপসারণের ক্ষমতা তাদের হাতে রয়েছে। অনলাইন নিরাপত্তা, সামাজিক নৈতিকতা ও জনস্বার্থ রক্ষায় এই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়।
সংস্থাটি আরও জানায়, এসব কনটেন্ট ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন (পিসিএস) এর ৮(২), ৮(৩) ও ৮(৫) ধারা এবং সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ২৫ ধারা লঙ্ঘন করেছে। তাই সংশ্লিষ্ট ১০৮টি লিংক দ্রুত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, অনলাইনে পর্নোগ্রাফি, জুয়া, প্রতারণা ও ঘৃণামূলক কনটেন্ট ছড়ানো রোধে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ওয়েবসাইট, পেজ বা চ্যানেল শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর আগে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও এক্স (পূর্বতন টুইটার) কর্তৃপক্ষকেও অনুরূপ কনটেন্ট অপসারণে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে, ১৯ অক্টোবর ঢাকার একটি আদালত টেলিগ্রামে পর্নোগ্রাফি ও প্রতারণা চক্র শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আদালত এই নির্দেশ দেন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘টেলিগ্রামে হাজারো তরুণীর নগ্ন ভিডিও বিক্রি’ শীর্ষক প্রতিবেদন আমলে নিয়ে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেসবুক ও টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল ভিডিও, ব্যক্তিগত ছবি ও নগ্ন ভিডিও বিক্রি ও শেয়ার করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে তরুণী ও নারীদের ব্ল্যাকমেইল ও হয়রানি করা হচ্ছে। এসব চ্যানেলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীদের ভিডিও পোস্ট করা হয়। ফেসবুক থেকেই টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক দেওয়া হয়, যেখানে আংশিক ভিডিও দেখিয়ে টাকা নিয়ে পুরো ভিডিও সরবরাহের ফাঁদ পাতা হয়।









